কাঁচাগোল্লা নাটোর জেলার এক ধরণের মিষ্টান্ন
কাঁচাগোল্লা
এটি তৈরি করতে কোনও তেল বা ভাজা প্রক্রিয়া না করেই কাঁচা ছানা এবং চিনির রসের সংমিশ্রণে একটি নতুন মিষ্টি সৃষ্টি হয়। রসগোল্লার মতো চিনির রসে ডোবানো হলেও, এটি কাঁচা ছানার রসে তৈরি হয়েছিল, তাই মিষ্টির নাম রাখা হয় কাঁচাগোল্লা। এর স্বাদ রসগোল্লা, পানিতোয়া, এমনকি সন্দেশকেও ছাড়িয়ে যায় এবং এতে যে কাঁচা ছানার এক বিশেষ মিষ্টি গন্ধ রয়েছে, তা অন্য কোনো মিষ্টিতে পাওয়া যায় না।
এভাবে কাঁচাগোল্লার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে, এবং মধুসূদন পালের দোকানে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন মন ছানার কাঁচাগোল্লা তৈরি হতে শুরু করে। এর সুখ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, এবং দোকানে ঢোল বাজিয়ে জানানো হতো কাঁচাগোল্লা প্রস্তুতির খবর।
প্রস্তুত প্রণালী
এটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ: ছানা, মাওয়া, এলাচ গুঁড়ো, চিনি। মাওয়া তৈরি করতে: দুধ, ঘি, পানি।
কাঁচা গোল্লা তৈরির প্রধান প্রক্রিয়া দুটি ধাপে ভাগ করা যায়:
১ম ধাপ: দুধ থেকে ছানা তৈরি করা
প্রথমে, দুধ ও পানি একসাথে মিশিয়ে একটি কড়াইয়ে জ্বাল দিতে হবে। মিশ্রণটি ফুটতে থাকলে, মাঝেমধ্যে নাড়তে হবে। ৫-৬ মিনিট পর ধীরে ধীরে সিরকা যোগ করতে হবে এবং নাড়াতে থাকবে। দুধ জমাট বাঁধলে এবং হালকা নরম হয়ে গেলে সবুজ রঙের পানি আলাদা হয়ে যাবে, তখন পাত্রটি নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপর ছানার পানি ঝরানোর জন্য সেটি একটি ঝাঁঝারিতে রাখতে হবে।
২য় ধাপ: ছানা পরিশোধন
পরবর্তী সময়ে, ছানা একটি সিল্কের কাপড়ে বেঁধে সারা রাত ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এ সময় কাপড় পেঁচিয়ে চাপ প্রয়োগ করে অতিরিক্ত পানি বের করা যায়। পানি বের করে, ছানাকে একটি কাঠের পাটাতনে রেখে হাতের চাপ প্রয়োগ করে মিহি ছানা তৈরি করতে হবে।
ছানা থেকে কাঁচাগোল্লা তৈরি
প্রথমে, ছানাটিকে তিন ভাগে ভাগ করতে হবে। এরপর দুইভাগ একটি পাত্রে রেখে মাঝারি আঁচে জ্বাল দিতে হবে। ছানার পানি বেরিয়ে আসলে এবং তা হালকা নরম হয়ে গেলে, মৃদু আঁচে কিছুটা চিনি যোগ করে আবার জ্বাল দিতে হবে। কিছুক্ষণ পরে, চিনি মেশানো ছানা আঠালো হয়ে গেলে, বাকি এক ভাগ ছানা যোগ করে ভালোভাবে নাড়াতে হবে। তারপর ক্রিম এবং এলাচ এর গুঁড়ো মিশিয়ে ভালোভাবে জ্বাল করতে হবে। এরপর, মিশ্রণটি কুসুম-গরম অবস্থায় ভালো করে ছেঁকে ঠান্ডা করতে নিতে হবে। তারপর, এভাবে তৈরি মিশ্রণ এর মিষ্টান্নটিকে কাঁচাগোল্লা হিসেবে বিক্রি করা হয়।
Comments
Post a Comment